সেন্টমার্টিন

সেন্টমার্টিন ভ্রমণ – কিভাবে যাবেন, হোটেল ঠিকানা ও ফোন নাম্বারসহ সকল তথ্য

সেন্টমার্টিন ভ্রমণ: সেন্টমার্টিন ভ্রমণের সকল তথ্য (২০২০)

সেন্টমার্টিন ভ্রমণ: সেন্টমার্টিন ভ্রমণের সকল তথ্য (২০২০)

সেন্টমার্টিন ভ্রমণ 

সেন্টমার্টিন ভ্রমণ – কিভাবে যাবেন, হোটেল ঠিকানা ও ফোন নাম্বারসহ সকল তথ্য

সেন্টমার্টিন দ্বীপ (Siant Martin’s Island), বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাংশে অবস্থিত একটি প্রবাল দ্বীপ (Coral Island)। সেন্টমার্টিন দ্বীপটি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ হতে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মায়ানমার-এর উপকূল হতে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত। প্রচুর নারিকেল পাওয়া যায় বলে স্থানীয়ভাবে একে নারিকেল জিঞ্জিরাও (Narikel Jinjira) বলা হয়ে থাকে। প্রচলিত আছে অনেক অনেক বছর আগে প্রতিকুল আবহাওয়ার মধ্যে এখানে দারুচিনি বোঝাই আরবের একটি বাণিজ্যিক জাহাজ পানির নীচে থাকা একটি বিশাল পাথরের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ভেঙ্গে পড়ে, যার ফলে জাহাজে থাকা দারুচিনি এই দ্বীপের সবখানে ছড়িয়ে যায় এবং পরবর্তীতে সেন্ট মার্টিন’স দ্বীপের নাম হয়ে যায় ‘দারুচিনির দ্বীপ’। এখানে হুমায়ুন আহমেদের লেখা ও তৌকির আহমেদের পরিচালনায় দারুচিনির দ্বীপ (Daruchini Dwip) মুভির স্যুটিং হয়েছিল।

সেন্টমার্টিন দ্বীপটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। পর্যটন মৌসুমে এখানে প্রতিদিন ৫টি লঞ্চ বাংলাদেশের মূল ভূখন্ড হতে আসা যাওয়া করে। সেন্ট মার্টিনের আসল মজা একরাত না থাকলে উপভোগ করা সম্ভব নয়। আরো ভাল হয় দুইরাত থাকলে। সেক্ষেত্রে ১টা দিন ছেড়া দ্বীপের (Chera Dwip) জন্য, আরেকটা দিন সেন্টমার্টিনের জন্য বরাদ্দ রাখা যেতে পারে। প্রতিদিনের পর্যটকরা বিকেলের মধ্যেই ফিরে যায়, তাই বিকেলের পর থেকে দ্বীপে ঘুরে বেরানোর মজাই আলাদা। আর যদি ভরা পূর্ণিমায় যেতে পারেন তাহলে তো কথাই নেই, রাতের বেলা সেন্ট মার্টিন’স দ্বীপে ঘুরে বাড়াবেন আর বাঁচার ইচ্ছেটা বাড়িয়ে নিবেন।

সেন্টমার্টিন ভ্রমণ

সেন্টমার্টিনে সাইকেল ভাড়া কত?

দ্বীপের কয়েক জায়গা বিশেষ করে পশ্চিম বীচ থেকে সাইকেল ভাড়া নেওয়া যায় ঘন্টা প্রতি ৬০-৮০ টাকায়। বীচ ধরে ঘুরতে পারবেন মনের সাধ মিটিয়ে।

সেন্টমার্টিনে বিদ্যুৎ কতক্ষন থাকে?

সেন্ট মার্টিনে পিডিবি বা পল্লী-বিদ্যুত এর সংযোগ নাই। পুরোটাই জেনারেটর নির্ভর। রিসোর্ট-হোটেলগুলো সন্ধ্যা থেকে সাধারণত রাত ১০টা-১১টা পর্যন্ত জেনারেটর চালায়। দিনের বেলায় পানির পাম্প ছাড়ার জন্য কিছুটা সময় চালু রাখতে পারে। শীতকালে ফ্যান লাগে না বলে দিনে কারেন্টের অভাব টের পাওয়াও যায় না। সমস্যা হয় মোবাইল, ক্যামেরা ল্যাপটপ এসব চার্জ করা নিয়ে । রাতের বেলা জেটি অর্থাত জাহাজ ঘাটে সারি সারি রেস্টুরেন্টের আলো-ঝলমলে পরিবেশে মনেই হয় না দ্বীপে কারেন্ট নাই। এরা অনেক রাত অবধি জেনারেটর চালু রাখে।

সেন্টমার্টিন ঘুরতে যাওয়ার জন্যে কিছু টিপস

  • সেন্টমার্টিন যাওয়ার জন্য ঢাকা থেকেই, কেয়ারীসহ বেশ কিছু ট্রাভেল এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে যেতে পারেন।
  • নভেম্বর থেকে মার্চ পযন্ত মাত্র ৪ মাস জাহাজ চলে। অন্য সময় যেতে হলে ট্রলারে করে যেতে হবে।
  • সেন্টমার্টিনে এখন অনেক হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ আছে তাই থাকার জায়গার অভাব হয় না।
  • সাশ্রয়ী দামে থাকতে শুক্রবার-শনিবার দ্বীপে না যাওয়াই ভালো।
  • দ্বীপে সবকিছু বাইরে থেকে যায়, তাই খাবার খরচ তুলনামূলক বেশি।
  • তিনদিনে জনপ্রতি খরচ হবে ৫-৬ হাজার টাকা। দলবল বড় করে আরো কমে ৩-সাড়ে ৩ হাজার টাকায় ঘুরে আসা যায়।

যেভাবে যাবেন

সেন্টমার্টিন যেতে হলে প্রথমে কক্সবাজার জেলার টেকনাফে আসতেই হবে। টেকনাফ থেকে জাহাজে অথবা ট্রলারে করে সেন্টমার্টিন যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে যেতে চাইলে সরাসরি বাসে টেকনাফ গিয়ে সেখান থেকে জাহাজে/ট্রলারে করে সেন্টমার্টিন যাওয়া সুবিধাজনক। কক্সবাজার ভ্রমণ পরিকল্পনায় থাকলে ঢাকা থেকে কক্সবাজার হয়ে তারপর টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন। সেন্টমার্টিন যাওয়ার সাম্ভাব্য সকল উপায় নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলোঃ

  • ঢাকা থেকে টেকনাফ
  • ঢাকা থেকে বাসে করে সরাসরি টেকনাফে যেতে পারবেন। ঢাকার ফকিরাপুল ও সায়েদাবাদ থেকে শ্যামলী, সেন্টমার্টিন পরিবহন, ঈগল, এস আলম, মডার্ন লাইন, গ্রীন লাইন ইত্যাদি বাস সরাসরি টেকনাফ যায়। ১০-১২ ঘন্টার এই ভ্রমণ ভাড়া বাস ও ক্লাস অনুযায়ী সাধারণত ৯০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। যদি শুধু সেন্টমার্টিন যেতে চান তাহলে ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে টেকনাফ চলে যাওয়াটাই সবচেয়ে ভালো। রাত ৮-১০ টার মধ্যে বাসে রওনা দিয়ে সকাল ৮টার মধ্যে টেকনাফ পৌঁছে যায়।
  • ঢাকা থেকে কক্সবাজার হয়ে টেকনাফ
  • ঢাকা থেকে প্রথমে কক্সবাজার এসে তারপর কক্সবাজার থেকে টেকনাফ যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে প্রতিদিনই গ্রীন লাইন, সোহাগ, টিআর ট্রাভেলস, শ্যামলী, হানিফ, সৌদিয়া, ঈগল, এস আলম, সিল্ক লাইন, সেন্টমার্টিন ইত্যাদি অনেক বাস কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে, বাস ভেদে ভাড়া সাধারণত ১০০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে। এছাড়াও ঢাকা থেকে বিমানে সরাসরি কক্সবাজার যাওয়া যায়।
  • কক্সবাজার থেকে টেকনাফ : কক্সবাজার থেকে লোকাল বাস/মাইক্রো/জিপ/সিএনজি ভাড়া করে টেকনাফ যাওয়া যায়। কক্সবাজার হতে টেকনাফ যাওয়ার বাস ভাড়া ১৫০ টাকা ও সিএনজি ভাড়া জনপ্রতি ২৫০ টাকা। টেকনাফ যেতে অবস্থা ভেদে সময় লাগে প্রায় দুই ঘন্টা। আর সকালের জাহাজ ধরতে চাইলে কক্সবাজার থেকে ভোরে (৬টার মধ্যে) টেকনাফের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হবে ।
  • চট্টগ্রাম থেকে টেকনাফ
  • চট্টগ্রামের সিনেমা প্যালেস থেকে এস আলম এবং সৌদিয়া বাস রাত ১২ টায় টেকনাফের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এছাড়া জিএসই গরিবুল্লাশাহ মাজার ও দামপাড়া থেকেও কিছু বাস চট্টগ্রাম-টেকনাফ রুটে চলাচল করে।
  • টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন
  • নভেম্বর-মার্চ মাস পর্যন্ত টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে প্রতিদিন সকাল থেকে আসা-যাওয়া করে কেয়ারী সিন্দাবাদ, কেয়ারি ক্রুজ, এম ভি ফারহান, আটলান্টিক ইত্যাদি জাহাজ। জাহাজে করে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যেতে সময় লাগে দুই ঘণ্টা থেকে আড়াই ঘন্টা। জাহাজের শ্রেনীভেদে যাওয়া ও আসার টিকেট ভাড়া ৫৫০-১৫০০ টাকা। জেটি ঘাট থেকে প্রতিদিন জাহাজগুলো সকাল ৯.০০-৯.৩০ মিনিটে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় এবং সেন্টমার্টিন থেকে ফেরত আসে বিকাল ৩.০০-৩.৩০ মিনিটে। তাই সময়ের আগে জেটি ঘাটে উপস্থিত না হতে পারলে জাহাজ মিস হবার সম্ভাবনা বাড়ে। আর এমন ক্ষেত্রে ট্রলারে করে ফেরা ছাড়া উপায় নেই যা অনেকটা বিপদজনক। সেন্টমার্টিন যাওয়ার শীপের টিকেট সাধাণত যাওয়া ও আসা সহ হয়ে থাকে। টিকেট করার সময় কবে ফিরবেন তা উল্লেখ করতে হবে।

সেন্টমার্টিন জাহাজ

নভেম্বরের ১ তারিখ থেকে টেকনাফ – সেন্টমার্টিন সমুদ্রপথে জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে

সধারণত নভেম্বর থেকে মার্চ/এপ্রিল এই পাঁচ মাস জাহাজ চলে। এই সময় ছাড়া অন্য সময়ে গেলে ট্রলার কিংবা স্পিডবোট দিয়ে যেতে হবে। শীত মৌসূম ছাড়া বাকি সময় সাগর উত্তাল থাকে, তাই এই সময়ে ভ্রমণ নিরাপদ নয়।

এছাড়াও ট্রলার ও স্পীড বোটে করে যাওয়া যায় সেন্টমার্টিন। সী ট্রাক গুলো এপ্রিল মাস পর্যন্ত চলাচল করে। এর পর বৈরি আবহাওয়ার কারণে প্রশাসন একে চলতে দেয় না। তবে যারা বৈরি মৌসুমে এডভেঞ্চার হিসেবে যেতে চান সেন্টমার্টিন তারা ট্রলার ভাড়া করে যেতে পারেন। তবে এই যাত্রাটি খুব একটা নিরাপদ নয়। সাধারণত দুর্ঘটনা ঘটে না, তবে ঘটে যেতে পারে। তাই সাবধান। কিন্তু উত্তাল সাগরের প্রকৃত রূপ দেখা কিংবা নির্জন দ্বীপে বসে বৃষ্টিস্নান করার লোভ যারা সামলাতে না পারেন তাদের জন্য ট্রলার ছাড়া বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই, ৮০০ টাকায় ট্রলার ভাড়া করা যাবে অথবা প্রতি জন ১০০ টাকা করে ভাড়া দিয়েও যাওয়া যাবে।

যদি আপনি এ্যাডভেঞ্জার প্রিয় হলে উত্তাল সাগরে ট্রলার যোগে ভ্রমণ অভিজ্ঞতা নিতে পারেন। টেকনাফ নামারবাজার ব্রিজ বা জেটি ঘাট থেকে ট্রলার, স্পিডবোট ও মালবাহী ট্রলার ছাড়ে। সিজনের সময় জাহাজ ঘাটের পাশ থেকে ও ট্রলার ছাড়ে। সাধারণত ট্রলার ও মালবাহী বোট ১৫০-২৫০ টাকা নেয়। এটা সিজন ও যাত্রীভেদে কম বেশি হয়ে থাকে। সময় লাগে প্রায় ৩ ঘন্টা।

কেয়ারী সিন্দবাদ এর যোগযোগ / ফোন নাম্বারঃ ০১৮১৭২১০৪২১, ০৩৪১-৬২৮১২, ৮১২৫৮৮১

সেন্টমার্টিনে থাকার হোটেল/রিসোর্ট

সেন্টমার্টিনের বেশ কিছু হোটেল ও রিসোর্টের নাম ও টেলিফোন নম্বর –

১। অবকাশ পর্যটন লি। পশ্চিম বিচ, ভাড়া ১৫০০-৩০০০
যোগাযোগ : ০১৭১৬৭৮৯৬৩৪
২। ব্যাগস বারী রিসোর্ট, পশ্চিম পাড়া, ভাড়া ১০০০-২০০০
যোগাযোগ : ০১৭৮৭০২২২০
৩। কিংসুক ইকো রিসোর্ট, গলাচিপা, ভাড়া ১৫০০-৩০০০
যোগাযোগ : ০১৭৫৩২২২২৮৬,
৪। ব্লু মেরিন রিসোর্ট, পশ্চিম বীচ জেটির পাশে, ভাড়া ১৫০০-৫০০০
যোগাযোগ : ০১৭১৩৩৯৯০০১
৫। সিটিভি রিসোর্ট, পশ্চিম বীচ, ভাড়া ১০০০-৩০০০
যোগাযোগ :০১৮১৫৬৩২০৩৭
৬। ডায়মন্ড সি রিসোর্ট, পশ্চিম বীচ, ভাড়া ১২০০-২৫০০
যোগাযোগ: ০১৬৭৭৫৭৭৮৯৯
৭। ড্রিম নাইট রিসোর্ট, পশ্চিম বীচ, ভাড়া ১৫০০-২৫০০
যোগাযোগ : ০১৮১২১৫৫০৫০
৮। হোটেল স্যান্ড শোর, বাজার এলাকা, ভাড়া ১২০০-২৫০০
৯। হোটেল সী ইন, বাজার এলাকা, ভাড়া ১৫০০-২৫০০
যোগাযোগ : ০১৭২২১০৯৬৭০
১০। হোটেল সী ফাইন্ড, পশ্চিম বীচ, ভাড়া ২০০০-৪০০০
যোগাযোগ: ০১৬২৬১৮২৭২৫
১১। ফরহাদ রিসোর্ট, পশ্চিম বীচ, ভাড়া ১২০০-২৫০০
যোগাযোগ: ০১৯১২৭৬০০১০
১২। ব্লু লাগুন রিসোর্ট, পশ্চিম বীচ জেটির পাশে, ভাড়া ১৫০০-৫০০০
যোগাযোগ : ০১৮১৮৭৪৭৯৪৬
১৩। কোকোনাট কোরাল রিসোর্ট, বিলাইকান্ধা, ভাড়া ১৫০০-৩০০০
যোগাযোগ : ০১৭৯০৫০৫০৫০
১৪। লাবিবা বিলাস রিসোর্ট, ওয়েস্ট বীচ, ভাড়া ৩০০০-১২০০০
যোগাযগ: ০১৭১৪৬৩৪৭৬২
১৫। লাইট হাউজ রিসোর্ট, পশ্চিম বীচ, ভাড়া ১৫০০-৩০০০
যোগাযোগ :০১৮১৯০৩৬৩৬৩
১৬। নীল দিগন্তে রিসোর্ট, কনা পাড়া, ভাড়া ২০০০-৪০০০
যোগাযোগ : ০১৭৩০০৫১০০৪
১৭। মিউজিক ইকো রিসোর্ট, দক্ষিণ প্রান্তে, ভাড়া ২৫০০-৪০০০
যোগাযোগ : ০১৬১৩৩৩৯৬৯৬
১৮। পান্না রিসোর্ট, পশ্চিম বীচ, ভাড়া ১৫০০-২৫০০
যোগাযোগ : ০১৮১৬১৭২৬১৫
১৯। প্রাসাদ প্যারাডাইজ, উত্তর বীচ, বাজারের নিকটে, ভাড়া ১৫০০-৪০০০
যোগাযোগ : ০১৭৯৬৮৮০২০৭
২০। সীমানা পেরিয়ে, পশ্চিম বীচ, কোণাপাড়া, ভাড়া ১৫০০-৩০০০
যোগাযোগ : ০১৭৩১৯৬২৬৬২
২১। সমুদ্র খানন, পশ্চিম বীচ, নেভী রোড়। ভাড়া ১২০০-২৫০০
যোগাযোগ : ০১৭১৩৪৮৬৮৬৬
২২। সমুদ্র কুটির, পশ্চিম বীচ, কোণাপাড়া। ভাড়া ১৫০০-৩০০০
যোগাযোগ : ০১৬১৬৫০৩১২৯
২৩। শায়রি ইকো রিসোর্ট, গলাচিপা, ভাড়া ১৫০০-২৫০০
যোগাযোগ : ০১৭১১২৩২৯১৭
২৪। এস কে ডি রিসোর্ট, বিছানাকান্ধি। ভাড়া ১৫০০-৪০০০
যোগাযোগ : ০১৭৯৭২৬১২৬১
২৫। কোরাল ব্লু রিসোর্টঃ ০১৭১৩১৯০০১৩, ০১৭১৩১৯০০০৭
২৬। হুমায়ুন আহমেদ এর সমুদ্র বিলাস : ০১৯১১৯২০৬৬৬

কি খাবেন ও কোথায় খাবেন

সেন্টমার্টিনের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ জিনিস হল ডাব যা একাধারে মিষ্টি ও সুস্বাদু। সেন্টমার্টিনে গেলে অন্তত একটা ডাব টেস্ট করা উচিত। যারা মাছ খেতে পছন্দ করেন তাদের জন্য সেন্টমার্টিন কোরাল, সুন্দরী পোয়া, ইলিশ, রূপচাঁদা, লবস্টার, কালাচাঁদা ইত্যাদি নানান ধরনের ও স্বাদের বাহার নিয়ে অপেক্ষা করছে। নিজের মত করে মাছ পছন্দ করে কিনে বারবিকিউ করার সুযোগ থাকে সব হোটেলেই। এছাড়া রিসোর্ট গুলোতেও নিজস্বভাবে বারবিকিউ করার ব্যবস্থা থাকে। আর যদি সুযোগ হয় তবে কুরা খেয়ে দেখতে পারেন (দেশী মুরগিকে কুরা বলে ডাকা হয়)। এখানে আরো রয়েছে অফুরন্ত লইট্টা, ছুড়ি, রূপচাঁদা, কাচকি ইত্যাদি জানাঅজানা শুঁটকি মাছের ভান্ডার।

এছাড়াও যেসব হোটেল ও রেস্তোরাঁতে গিয়ে খেতে পারেন তার কয়েকটি হল কেয়ারি মারজান রেস্তোরাঁ, বিচ পয়েন্ট, হোটেল আল্লার দান, বাজার বিচ, আসাম হোটেল, সি বিচ, সেন্টমার্টিন, কুমিল্লা রেস্টুরেন্ট, রিয়েল রেস্তোরাঁ, হাজী সেলিম পার্ক, সেন্টমার্টিন টুরিস্ট পার্ক, হোটেল সাদেক ইত্যাদি। তবে অবশ্যই একটু যাচাই করে নিবেন।

কি করবেন ও কি দেখবেন

যারা দিনে গিয়ে দিনেই সেন্টমার্টিন থেকে ফিরে আসবেন তারা পরবর্তীতে আফসোস করতে পারেন তাই সবচেয়ে ভালো হয় অন্তত একদিন সেন্টমার্টিনে অবস্থান করা। এতে যেমন পুরো দ্বীপ ঘুরে দেখতে পারবেন তেমনি এই আনন্দময় ভ্রমণ আপনাকে সবসময় মোহিত করবে।

সেন্টমার্টিন ভ্রমণ

ডে লং ট্রিপ: যারা সময়ের অভাবে ডে লং ট্রিপে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যাবেন তারা জাহাজ থেকে নেমে সময় নষ্ট না করে ভ্যান নিয়ে সরাসরি চলে আসুন পশ্চিম বীচ বা মেইন বীচে। এর জন্য আপনাকে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা ভ্যান ভাড়া গুণতে হবে। এখানে হেঁটে আসতে ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগে তবুও ডে লং ট্রিপে সময় নষ্ট করা ঠিক হবে না। এই জায়গাটা পানিতে নামার জন্য ভালো তাই বীচে এসে চাইলে সচ্ছ পানিতে গা ভেজাতে পারেন। যাই করেন না কেন অবশ্যই মাথায় রাখবেন আপনাকে ২ টার আগে ফ্রি হতে হবে নইলে খাওয়ার সময়টুকুও পাবেন না। আর অবশ্যই ৩ টার আগেই আপনাকে জাহাজে পৌঁছাতে হবে। হাতে সময় থাকলে মেইন বীচের কাছে হুমায়ূন আহমেদের কটেজ দেখে আসতে পারেন। সেন্টমার্টিন ভ্রমণে এই ধরণের ট্রিপ আপনাকে সময়ের প্রতি সীমাবদ্ধ করে রাখবে তাই অন্তত এক দিনের প্ল্যান নিয়ে সেন্টমার্টিন আসুন।

১ দিনের প্ল্যান: যারা এক দিনের প্ল্যান নিয়ে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে আসবেন তারা জাহাজ থেকে নেমে হোটেলে উঠে পড়ুন। দুপুরের খাবার খেয়ে হালকা বিশ্রাম নিয়ে চলে আসতে পারেন ছেঁড়া দ্বীপ। চেষ্টা করবেন ৪ টার আগে আগেই রওনা দিতে তাহলে ছেঁড়া দ্বীপে সূর্যাস্ত দেখে ফিরতে পারবেন। ছেঁড়া দ্বীপের সূর্যাস্ত অসাধারণ তবে সূর্যাস্তের পরে বেশি দেরি করবেন না। সন্ধ্যায় মূল দ্বীপে ফিরে বাজারের জেটিতে আড্ডা দিতে পারেন কিংবা পশ্চিম বীচের যে কোন জায়গায় বসাতে পারেন গানের আসর। রাতে বার-বি-কিউ করার ক্ষেত্রে রিসোর্টে করতে পারেন। রিসোর্টে মাছের দাম একটু বেশি নিলেও মাছগুলো ফ্রেশ থাকে। অথবা আশেপাশের হোটেলে পছন্দমত মাছ বারবিকিউ করে খেতে পারবেন। পরদিন সকালের সময়টা চারপাশে হেঁটে কাটিয়ে দিন অথবা আগের দিন ছেঁড়া দ্বীপে না গিয়ে থাকলে সকাল সকাল ছেঁড়া দ্বীপ থেকে ঘুরে আসুন। দুপুরের আগেই ফিরে আসুন, গোসল করে দুপুরের খাবার খেয়ে আস্তে ধীরে ২ টা ৩০ এর মধ্যে নির্ধারিত জাহাজে উঠে পড়ুন।

সেন্টমার্টিন ভ্রমণ খরচ

যে কোন ভ্রমণে খরচ কত হবে তা সম্পূর্ণই আপনার উপর নির্ভর করবে। আপনি কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, কি খাবেন ও কি করবেন সেইসব বিষয়ের সাথে কোন সময় যাচ্ছেন তার উপরেও খরচ নির্ভর করে। পিক সিজন (ডিসেম্বর-জানুয়ারি) বা ছুটির দিন গুলোতে থাকা খাওয়া সহ অন্যান্য খরচ একটু বেশিই হবে। কম খরচে ও মোটামুটি মানের হোটেলে ১ রাত থাকা ও খাওয়া সহ ঢাকা থেকে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে কত খরচ হবে তার একটা ধারণা দেবার জন্যে খরচের তালিকা দেওয়া হলো। যা থেকে আপনি কিছুটা হলেও খরচ সম্পর্কে ধারণা করতে পারবেন।

যাতায়াত খরচ
বাসের টিকেট – যাওয়া ও আসা সহ ১,৮০০ টাকা (নন এসি), ৩,১০০-৩,৪০০ টাকা (এসি)।
শিপ/জাহাজ ভাড়া – যাওয়া ও আসা সহ ৬০০-৮০০ টাকা (ওপেন ডেক), ১০০০-১৬০০ টাকা (এসি)।
ছেড়া দ্বীপ – ট্রলারে যাওয়া আসা ২০০ টাকা।
লোকাল যাতায়াত – সেন্টমার্টিনের বাজারে কিংবা আশেপাশে যাওয়ার ভ্যান ভাড়া ১৫০-২০০ টাকা।
অন্যান্য খরচ – ২০০টাকা।

খাবার খরচ
যাত্রার দিন – যাত্রা বিরতিতে রাতের খাবার ১০০-২০০ টাকা।
১ম দিন – নাস্তা ৬০-১০০ টাকা, দুপুরের খাবার ১২০-২২০ টাকা ও রাতের খাবার/বার বি কিউ ২০০-৩০০ টাকা।
২য় দিন – নাস্তা ৬০-১০০ টাকা, দুপুরের খাবার ১২০-২২০ টাকা।
ফিরে আসার দিন – যাত্রা বিরতিতে রাতের খাবার ১০০-২০০ টাকা।

চাইলে আরও কম খরচে খাওয়া দাওয়া করা সম্ভব। বাজারের ভিতরের দিকে হোটেল গুলোতে গিয়ে সাধারণ খাবার খেলে খরচ অনেক কমে যাবে।

থাকার খরচ
স্ট্যান্ডার্ড হোটেল/রিসোর্ট কাপল রুম বা ডাবল বেড ১৫০০-২৫০০ টাকা। বাজারের দিকে মোটামুটি মানের হোটেল ৮০০-১২০০ টাকা। খুবই পিক সিজন আর সরকারি ছুটির দিনে ভাড়া আরও একটু বেড়ে যাবে। এক রুমে কয়েকজন মিলে থাকলে খরচ ভাগ হয়ে কমে যাবে। পিক সিজন ও ছুটির দিন ছাড়া গেলে খরচ আরও কম হবে। এছাড়া আরও কম খরচে থাকতে চাইলে স্থানীয় মানুষদের বাড়িতে অল্প টাকায় থাকতে পারবেন, এ জন্যে একটু খুঁজে ও কথা বলে দেখতে হবে।

সেন্টমার্টিন ভ্রমণ

ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা

  • সেন্টমার্টিন আমাদের দেশের সম্পদ, তাই প্রকৃতির ক্ষতি হয়ে এমন কিছু করবেন না।
  • রোহিঙ্গাজনিত সমস্যার কারণে সেন্টমার্টিনে মোবাইল ফ্রিকোয়েন্সি কম থাকে। কথা বলতে সমস্যা হতে পারে। তবে টেলিটক তুলনামূলক ভাল কাজ করে।
  • বর্তমানে নিয়মিতভাবে সেন্টমার্টিনে বিজিবি টহল দেয়৷ তারা অনেক সময় রাত ১২টার পর পর্যটকদেরকে বীচ বা জেটি এলাকায় থাকতে নিষেধ করে।
  • সঠিক জায়গায় ময়লা আবর্জনা ফেলবেন। দয়া করে প্লাস্টিক/পলিথিন কিছু সৈকতে ফেলে আসবেন না।
  • কম খরচে সেন্টমার্টিন থাকা ও খাওয়ার জন্যে ছুটির দিন গুলোতে না গিয়ে অন্যান্য দিনে যেতে পারেন।
  • বর্তমানে সেন্টমার্টিনে অনেক হোটেল ও কটেজ গড়ে উঠেছে, থাকার জায়গায়র অভাব তেমন হয় না।
  • পর্যটন এলাকায় যে কোন কিছুর জন্যে দরদাম করবেন কেনাকাটায়।
  • মানুষ বেশি হলে আগেই শিপের টিকেট কেটে রাখতে পারেন।
  • দালালদের খপ্পরে পড়বেন না। নিজেই সবকিছু করুন।
  • চাইলে কক্সবাজার বিভিন্ন এজেণ্ট থেকে সেন্টমার্টিন এর প্যাকেজ কিনে নিতে পারবেন।
  • সেন্ট মার্টিন যাওয়া আসার সময় জাহাজের ডেক থেকেই সবচেয়ে সুন্দর ভিউ দেখতে পাবেন।
  • সমুদ্রে নামার সময় সতর্ক থাকুন।
Tags
Show More

ভ্রমণ গাইড

ভ্রমণ নির্দেশনা - দেশ বিদেশ ভ্রমণের সকল তথ্য ও পরামর্শ. বাংলাদেশ ও বিদেশের দর্শনীয় ভ্রমণ স্থানে ঘুড়ে বেড়ানোর সকল তথ্য নিয়েই "দূরে কোথাও!"। কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, কি দেখবেন, খরচ, ভ্রমণ গল্প, টিপস ও নিউজ সহ ভ্রমণ সম্পর্কিত সবকিছু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close
error: Alert: Content is protected !!